সাধারণত কাজা বলতে আমরা বুঝি বকেয়া। আর কাফফারা বলতে বুঝি জরিমানা। রোজার কাজা ও রোজা ভঙ্গের কাফফারা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল। রমজানের রোজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে তা ভঙ্গ করলে কখনো কাজা কিংবা কখনো কাজা + কাফফারা অর্থাৎ বকেয়া + জরিমানা দুটিই আদায় করতে হয়।
আরও পড়ুন: রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ
কাজা রোজার নিয়ম ও রোজা ভাঙ্গার কাফফারা
শরিয়তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা ১ টির পরিবর্তে ১ টি অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু ১ টি রোজাই যথেষ্ট। এবং কাজা + কাফফারা অর্থাৎ একটির পরিবর্তে ১+৬০ = ৬১টি রোজা রাখতে হবে।
রোজার কাফফারা আদায় করার তিনটি বিধান রয়েছে।
- একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
- যদি কারও জন্য ৬০টি রোজা পালন সম্ভব না হয় তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খানা দেবে। অপর দিকে কেউ অসুস্থতাজনিত কারণে রোজা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন দুই বেলা করে পেটভরে খানা খাওয়াতে হবে।
- গোলাম বা দাসী আজাদ বা নিঃশর্তে মুক্ত / স্বাধীন করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সেহরি ও ইফতারের দোয়া এবং নিয়ত
যেসব কারণে শুধু কাজা আদায় করতে হয়
- স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করার কারণে যদি বীর্যপাত হয়।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে।
- পাথরের কণা, লোহার টুকরা, ফলের বিচি গিলে ফেললে।
- ডুশ গ্রহণ করলে।
- নাকে বা কানে ওষুধ দিলে (যদি তা পেটে পৌঁছে)।
- মাথার ক্ষতস্থানে ওষুধ দেওয়ার পর তা যদি মস্তিষ্কে বা পেটে পৌঁছে।
- যোনিপথ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে সহবাস করার ফলে বীর্য নির্গত হলে।
- স্ত্রী লোকের যোনিপথে ওষুধ দিলে।
উল্লেখ্য, রমজান মাস ছাড়া অন্য সময়ে রোজা ভঙ্গের কোনো কাফফারা নেই, শুধু কাজা আছে।
যেসব কারণে কাজা ও কাফফারা উভয়ই আদায় করতে হয়
- রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
- রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করলে।
আরও পড়ুন: সেহরি ও ইফতারের দোয়া এবং নিয়ত
সূত্র: আহকামে যিন্দেগী, কৃতজ্ঞতা: ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান, ও মাওলানা মিরাজ রহমান